রাজধানীর বেইলি রোডে আগুনে নিহত ৪৬, হস্তান্তর ৩৫

শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:
রাজধানীর বেইলি রোডে ভয়াবহ আগুনে ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এদের মধ্যে ৩৫ জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত স্বজনরা শনাক্ত করার পর লাশগুলো তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ঢাকা জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে মোস্তফা আব্দুল্লাহ আল নুর (এনডিস) বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত নিহত ৪৬ জনের মধ্যে ৩৮ জনের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। এদের মধ্যে ৩৫ জনের লাশ স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। স্বজনরা তাদের চেহারা, জামাকাপড় দেখে শনাক্ত করেন। পরে পরিচয় নিশ্চিত হয়ে লাশগুলো তাদের কাছে দেয়া হয়েছে।’

বাকি লাশগুলোর বিষয়ে তিনি আরো বলেন, ‘শনাক্ত না হওয়া ছয়জনের মধ্যে পাঁচ জনেরই চেহারা বোঝা যাচ্ছে। তবে একটি লাশ পুড়ে একেবারে ছাই হয়ে গেছে। সেই লাশটি ডিএনএ টেস্ট ছাড়া হস্তান্তর করা সম্ভব হবে না।’

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাতে বহুতল ভবনটিতে লাগা ভয়াবহ আগুনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫ জনে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩ ইউনিটের চেষ্টায় দুই ঘণ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এলেও পুড়ে গেছে বাণিজ্যিক ভবনটি। রাতেই ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে লাশ হস্তান্তরের জন্য নিহতদের স্বজনদের কাছে তথ্য চাওয়া হয়। এর মধ্যে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিহতদের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে পুলিশ। এ ঘটনায় দগ্ধ হয়ে শেখ হাসিনা বার্ন ইন্সটিটিউট ও ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি আছেন আরো ২২ জন। যাদের বেশিভাগেরই পুড়ে গেছে শ্বাসনালী। বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে রাত ৯টা ৫০ মিনিটে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে থাকে। ৯টা ৫৬ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের ছয়টি ইউনিট কাজ শুরু করে। একে একে যোগ দেয় ১৩টি ইউনিট।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ‘হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পান তারা। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে পুরো ভবনে। প্রথম দুই ঘণ্টা কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে রাত ১২টার পর থেকে আহত ব্যক্তিদের ভবন থেকে বের করে আনা হয়।’
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলেন, ‘পুরো ভবনে অসংখ্য গ্যাস সিলিন্ডার মজুত ছিল। এমনকি সিঁড়িতেও মজুত ছিল সিলিন্ডার। ফলে ভবনটিতে আগুন লাগার সাথে সাথে তা দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে। ভবনটিতে পর্যাপ্ত অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা ছিল না বলে জানিয়েছেন পুলিশ। ভবনটিতে কাচ্চি ভাই, পিৎজা ইন, স্ট্রিট ওভেন, খানাসসহ বেশ কয়েকটি রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এছাড়া ইলিয়েন, ক্লোজেস্ট ক্লাউডসহ বেশকিছু জনপ্রিয় পোশাকের দোকানও রয়েছে। ঘটনা তদন্তে এরই মধ্যে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে ফায়ার সার্ভিস।

Related posts

Leave a Comment